ইমাম হুসাইন আঃ এরঁ কারামত খন্ড- ২
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ঘোড়া বেয়াদবকে আগুনে নিক্ষেপ করলঃ
ইমামেআলী মকাম, ইমামেআরশে মকাম, ইমামেহুমাম, ইমামে তৃষ্ণায়ে কাম, হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ ১০ ই মুহাররামুল হারাম, শুক্রবার, ৬১ হিজরীতে ইয়াজিদ বাহিনীর জুলুমনির্যাতনের প্রতিবাদে যখনকারবালা প্রান্তরে ভাষণদিচ্ছিলেন, তখন তাঁরমজলুম কাফিলার তাবুসংরক্ষণের উদ্দেশ্যে খননকৃত খন্দকে প্রজ্জলিত আগুনের দিকে ইঙ্গিত করে(মালিক বিন উরওয়াহ নামক) এক বেয়াদব ইয়াজিদী বেপরোয়াভাবে বকাবকি করতে লাগল: “হে হোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ! তুমি জাহান্নামের আগুনের পূর্বে এখানেই আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছ।
তার কথার জবাবেহযরত সায়্যিদুনা ইমামেআলী মকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ বললেন: كَذَّبْتَ يَا عَدُوَّ الله অর্থাৎ- “হে আল্লাহর দুশমন! তুই মিথ্যুক।” তোরকি ধারণা, ) আল্লাহর পানাহ) আমি দোযখেযাব?” ইমামে আলীমকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর কাফিলার একজননিবেদিত প্রাণ যুবকহযরত সায়্যিদুনা মুসলিম বিন আওসাজা رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ সেই নরাধমইয়াজিদীর মুখে তীরনিক্ষেপের জন্য হযরতইমামে আলী মকামرَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করলেন।কিন্তু হযরত ইমামে আলীমকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ তাঁকেতীর নিক্ষেপের অনুমতি না দিয়ে বললেন: “আমি আমাদের পক্ষথেকে যুদ্ধের সূচনাকরতে চাই না।” অতঃপর ইমামে তৃষ্ণায়ে কাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ হাত উত্তোলন করেআল্লাহ্ তাআলার দরবারে দোয়া করলেন: “হে রব্বে কাহ্হার! তুমি এ পাপিষ্ঠকে পরকালে দোযখের আগুনের শাস্তি দেয়ার পূর্বে ইহকালেও আগুনের শাস্তি প্রদান করো।”
হযরতইমামে আলী মকামرَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ এর দোয়া সাথেসাথেই আল্লাহ্ তাআলার দরবারে কবুল হয়েগেল। সে নরাধমের ঘোড়ার পা মাটিরএকটি গর্তে পতিতহয়ে ঘোড়াটি প্রচন্ড বেগে ধাক্কা খেল।ফলে সে নরাধম বেয়াদব ঘোড়ারপিঠ থেকে পড়েধরাশায়ী হলো, তারপা দুটি ঘোড়াররেকাবের সাথে আটকেগেলো।
ঘোড়া তাকেটেনে-হেঁচড়ে নিয়েগিয়ে সে খন্দকের লেলিহান আগুনে নিক্ষেপ করল। আর সে নরপিশাচ আগুনেজ্বলে পুড়ে ছাইহয়ে গেল।
তারএ করুন পরিণতি দেখে ইমামে আলীমকাম رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ সিজদায়ে শোকর আদায় করলেনএবং আল্লাহ্ তাআলার প্রশংসা করে বললেন: “হে আল্লাহ্! তোমারশুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, তুমি আমার চোখেরসামনে রাসূল পরিবারের একজন দুশমনকে শাস্তি দিয়েছ।” (সাওয়ানেহে কারবালা, ৮৮ পৃষ্ঠা)
আহলেবাইত পাক ছে বে বাকীয়াঁ গুস্তাখিয়াঁ
لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْكُمْ দুশমনানে আহলেবাইত
صَلُّوا عَلَى الحَبِيب ! صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلى مُحَمَّد
কালো বিচ্ছু দংশন করলঃ
রাসূলপরিবারের সদস্যদের সাথেবেপরোয়া ও বেয়াদবীপূর্ণ আচরণের করুণ ও মর্মান্তিক পরিণতি তৎক্ষণাৎ দেখার পরওবেয়াদব ইয়াজিদ বাহিনী তা থেকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণনা করে বারবার এটাকে নিছক একটিদুর্ঘটনা বলে উড়িয়েদিতে থাকে।
এক বেয়াদব ইয়াজিদী বলল: “হে হোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ ! আল্লাহর রাসূলের صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم সাথেআপনার সম্পর্ক কী?” এটা শুনে ইমামহোসাইন رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ মনে খুবই কষ্টপেলেন। তাই তিনিভারাক্রান্ত হৃদয়ে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে দোয়াকরলেন: “হে রব্বেজব্বার! তুমি এ বেয়াদবকেও শাস্তি দাও। সাথে সাথেইআল্লাহ্ তাআলার দরবারে তাঁর দোয়া কবুলহয়ে গেল।
আল্লাহর আযাবের প্রচন্ড আঘাতেসে হতভাগা ধরাশায়ী হলো। হঠাৎ তারপায়খানার হাজত হলো।পায়খানার বেগ সামলাতে না পেরে সে তাড়াতাড়ি ঘোড়াথেকে নেমে একদিকে দৌঁড়ে গিয়ে উলঙ্গহয়ে বসে পড়ল।হঠাৎ একটি কালোবিচ্ছু এসে তাকেদংশন করল।
বিচ্ছুর বিষাক্ত ছোবলে সে ময়লা যুক্তঅবস্থায় ছটফট করতেলাগল। অতঃপর তারবাহিনীর সামনে করুণভাবে লাঞ্চিত হয়েসে বেয়াদব প্রাণহারাল। তারা এবারওএ ঘটনাকে নিছকএকটি দুর্ঘটনা বলেউড়িয়ে দিল। (প্রাগুক্ত, ৮৯ পৃষ্ঠা)
ফয়যানে মাদিনা থেকে সংগৃহীত